শাহেদুল ইসলাম মনির, কুতুবদিয়া:
হাতের কাছে যা পেতেন তার ওপরই ছবি আঁকতেন। হোক সেটা নষ্ট বা অন্যকিছু। ছোটবেলা থেকে জাতীয় পতাকা, শাপলা, ও ঘর গাছপালা এবং পশু পাখির
চিত্রের প্রতি প্রবল মনোযোগ ছিল। হঠাৎ একদিন তিনি ভাবলেন, গাছের ঝরে পড়া পাতার ওপর ছবি আঁকলে কেমন হয়! যেমন ভাবনা তেমন কাজ। শুকনো নয়। গাছের কাঁচা পাতার ওপর ব্লেড দিয়ে কেটে ছবি তৈরি করে শিল্পের নতুন ঘরানা সৃষ্টি করেছেন কক্সবাজার জেলার সাগর বেষ্টিত দ্বীপ কুতুবদিয়া উপজেলার আরিফুল ইসলাম।
তার এই অভিনব শিল্পকর্ম যিনি দেখছেন তিনিই বাহবা দিচ্ছেন তাকে। পাতা কেটে আকাঁ ছবিটি
মনে হবে এ যেন এক জীবন্ত মানুষ, পাতাতে উঁকি দিচ্ছেন। অভিনব এই শিল্পকর্মের জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন দ্বীপ এবং দ্বীপের বাইরে ।
তিনি বাড়িতে বসেই ব্লেড দিয়ে পাতা কেটে তৈরি করছেন নানা শিল্পকর্ম। এরমধ্যে যেমন রয়েছে- ফুল, প্রাকৃতিক দৃশ্য,স্বাধীনতার নায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি,ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মর্তুজাসহ বহু বিপ্লবীর ছবি।
২০২১ সালে পাতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকে এটিএন বাংলা টিভি ও বিজয় টিভিতে বেস্ট আর্টিষ্ট এওয়ার্ড নিবার্চিত হন এবং ক্রেষ্ট, সনদ পান। অন্যদিকে,
আঁকাআঁকির পাশাপাশি কবিতা ছোট গল্প লিখার চর্চা করেন যা কয়েকটি দৈনিক জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ও অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ ঢাকা নব সাহিত্য প্রকাশ কতৃক আয়োজিত ২৪০ জন উদীয়মান কবি নিয়ে লিখা আহ্বানে অংশগ্রহণ করে ১৩৬ নম্বারে লিখা কবিতা বিজয়ী স্থান পান। পরে দুইটি বই একটি ক্রেস্ট ও সনদ পান। চলতি বছরে ১ আগষ্ট ঢাকায় ক্ষুদে প্রতিভা রাজ্যে আয়োজিত চিত্র প্রর্দশন-২০২৩ এ অংশগ্রহণ করেন। সেখানেও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের একটি পাতায় আঁকা চিত্র নিয়ে নিবার্চিত হন। সেটি জাতীয় জাদুঘরে ২৬ আগষ্ট প্রদর্শন হয় এবং পুরস্কার প্রদান করা হয়।
২০১৭ সালে দ্বীপের শিশুদের মধ্যে এ প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে কুতুবদিয়া চারুকলা একাডেমি নামে একটি আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠিত করেন। আবার তাঁরই শিক্ষার্থীরা চিত্রাঙ্কনের উপজেলা,জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সাফল্য হচ্ছেন।
অভিনব এই শিল্পকর্ম সম্পর্কে জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম জানান,কাঁচা পাতাকে সংবাদপত্র বা অন্য কোনো কাগজের মধ্যে কয়েকদিন চাপা অবস্থায় রাখলে কাগজ পাতার রস শুষে নেয়। তখন তার পেছনে সাদা অথবা অন্য কোনো রঙের কাগজ আঠা দিয়ে লাগিয়ে ল্যামিনেশন করে নিলে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়।
এই শিল্পকর্মটি নেহাত শখের বসে করছেন না কোনো ব্যবসায়িক পরিকল্পনা আছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এখনো তিনি পড়াশোনার কাজে ব্যস্ত। তাই এই মুহূর্তে লিফ আর্ট নিয়ে ব্যবসার বিষয়ে কোনো চিন্তা ভাবনা তার নেই। আগামী দিনে এটাকে আরও কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় তা ভেবে দেখবেন তিনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।